শুরুতেই বন্ধ হয়ে গেল বহুল প্রতীক্ষিত, আলোচিত এবং কাক্সিক্ষত ফরিদগঞ্জ ও হাজীগঞ্জের মধ্যে সেতুবন্ধনের একমাত্র উপলক্ষ উটতলী ব্রিজের কাজ। কাজ শুরু করে মাত্র উত্তর পাশে দু-তিনটি পিলারের পাইলিংয়ের কাজ চলছিলো। কিন্তু বিভিন্ন রকম ইস্যু সৃষ্টি করে বন্ধ হয়ে গেছে এই ব্রিজের কাজ। গত ক’দিন বিভিন্ন জনের কাছে মৌখিকভাবে জেনে সরজমিনে উটতলী গেলে দেখা যায় ব্রিজের কাজ বন্ধ হয়ে আছে।
স্থানীয় উটতলী খেয়াঘাটের মাঝিদের মাধ্যমে জানা যায়, আরো অনেক আগেই অজ্ঞাত কারণে ঠিকাদার কাজ বন্ধ করে তাদের রড, সিমেন্ট এবং অন্যান্য কিছু সামগ্রী এখান থেকে নিয়ে গেছেন। কাজের সাইটে গেলে কোনো শ্রমিক এবং দায়িত্বরত কাউকে পাওয়া যায় না। ঠিকাদারের অফিসে গেলে, একজনকে পাওয়া গেলেও তিনি নাম বলতে চান নি। তিনি বলেন, ব্রিজের কাজের বন্ধের বিষয়ে তিনি কোনো মতামত দিতে পারবেন না। এ সময় কাজের সাইটে ঠিকাদারের বিভিন্ন মালামাল যেমন- একটি ক্রেন, কয়েকটি রোলার, কয়েকটি ভেকু এবং কিছু পাথর পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
স্থানীয়দের মধ্যে লোকমান হোসেন, নূরুল ইসলাম, আবু তাহের, সোলেমানসহ আরো অনেকে বলেন, ব্রিজের কাজ কয়েকদিন চলেছিলো। কিন্তু ব্রিজ করতে স্থানীয়দের যে সম্পত্তি ব্যবহার করতে হবে তা অধিগ্রহণ না করেই কাজ শুরু করে। এমতাবস্থায় স্থানীয় সাইদুজ্জামান শিমুলসহ আরো ক’জন ক’টি মামলা দায়ের করেন। যে কারণে ব্রীজের কাজ বন্ধ আছে। অন্যদিকে আরো ক’জন বলেন, ব্রিজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কাজের ধীরগতির কারণে এলজিইডি কাজ বন্ধ করে রেখেছে।
বিষয়টি নিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ইঞ্জিনিয়ার মোঃ আউয়ালের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, আমি সেখান থেকে চলে এসেছি। এলজিডি আমাদেরকে কাজ বন্ধ রাখতে বলেছে, তাই কাজ বন্ধ। নির্বাহী প্রকৌশলী এ বিষয়ে ভালো বলতে পারবেন বলে তিনি জানান।
ফরিদগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী আবরার আহমেদের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কর্তৃক কাজের ধীরগতি এবং ঠিকাদারের কিছু অনিয়মের কারণে আমরা তার বিরুদ্ধে মামলা করেছি। বস্তুত তাদেরকে দিয়ে আমরা কাজ করাতে চাই না। মামলা নিষ্পত্তি হলেই আবার কাজ শুরু করা হবে বলে তিনি জানান।
উল্লেখ্য, ডাকাতিয়া নদীর দুই পাড়ের সেতুবন্ধন ও ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটানোর লক্ষ্যে এবং দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘ পথ না ঘুরে এখান দিয়ে সরাসরি যাতায়াতের সুব্যবস্থার উদ্দেশ্যে উল্লেখিত স্থানে লতিফগঞ্জ বাজার-পশ্চিম সুবিদপুর ইউনিয়ন (উটতলী) ভায়া গুহের বাজার সড়কে ডাকাতিয়া নদীর উপর ৫৫০মিটার এ সেতুর দৈর্ঘ্য নির্ধারণ করা হয়। ব্রিজের জন্যে মোট নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ১০৭ কোটি টাকা। মূল সেতুর নির্মাণ কাজের জন্যে প্রাক্কলিত মূল্য ৬৩ কোটি ৪৪ লাখ ৬ হাজার ১শ’ ৯ টাকা। ১৬ অক্টোবর ২০২২ সালে কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মুহাম্মদ শফিকুর রহমান। সেতুর কাজ দেয়া হয় মেসার্স সুরমা এন্টারপ্রাইজ-মোহাম্মদ আমিনুল হক প্রাঃ লিঃ, বাড়ি নং ৬, ফ্ল্যাট নং এ-২, গ্রীন রোড, ঢাকাকে। ব্রিজটির কাজ শুরু করার তারিখ ছিল ৮ জুন ২০২২ এবং কাজ সম্পাদনের তারিখ ছিল ২২ মে ২০২৪ খ্রিঃ। বাস্তবায়নে ছিলো স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর, চাঁদপুর।
এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো। বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।