শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনির এমপির পিতা ভাষাবীর এম. এ. ওয়াদুদের ৪০তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। এ দিনটিকে মনে শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আবেগপূর্ণ স্ট্যাটাস দিয়েছেন নিম্নে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী পোস্টটি তুলে ধরা হলো :
আব্বুর চলে যাবার চল্লিশ বছর হলো
তুমি এখনও তেমনই আছো আমার কাছে, সব বিষয়েই যেন তোমার স্নেহমাখা কথা শুনতে পাই সবসময়। সংশয়ে পথ দেখাও, ভুলের আশংকায় সাবধান করো, আনন্দে, বেদনায় সঙ্গে পাই, প্রতিবন্ধকতায় সাহস আর অনুপ্রেরণা পাই। তুমি আমার ধ্রুবতারা। শুধু একেক সময় মনটা হু হু করে ওঠে যখন তোমাকে একটু ছুঁয়ে দেখতে ভীষণ ইচ্ছে করে অথচ জানি তা আর সম্ভব না। আমার ভালোবাসা আর শ্রদ্ধা তোমার জন্য আব্বু-একজন সাহসী ও সংবেদনশীল মানুষ যিনি তাঁর জীবনকে উৎসর্গ করেছিলেন বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলার মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে। বিনিময়ে কখনো কিছুই চাননি। হুলিয়া, জেল, জুলুমের মধ্যে কেটেছে জীবনের একটা বড় অংশ। শুধু চেয়েছেন সন্তানেরাও তাঁর মতো করেই দেশ আর দেশের মানুষকে ভালোবাসবে। শিখিয়েছেনও তাই।
সবার কাছে এ ভাষাবীর, অনন্য সংগ্রামী, ত্যাগী, শুদ্ধাচারী, দেশপ্রেমিক মানুষটির জন্য তাঁর চল্লিশতম মৃত্যুবার্ষিকীতে দোয়া চাই।
উল্লেখ্য, আজ ২৮ আগস্ট ভাষাবীর এম. এ. ওয়াদুদের ৪০তম মৃত্যুবার্ষিকী। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের ছাত্র ও বিভিন্ন আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী এবং পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক, দৈনিক ইত্তেফাকের সাবেক কর্মাধ্যক্ষ মরহুম এম. এ. ওয়াদুদ ১৯২৫-এর ১ আগস্ট চাঁদপুর জেলার রাঢ়ির চর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
এম. এ. ওয়াদুদ গণতান্ত্রিক যুবলীগ (১৯৪৮), পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ (১৯৪৮) ও কেন্দ্রীয় কচি-কাঁচার মেলার (১৯৫৬) প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন। মরহুম এম. এ. ওয়াদুদ পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ (১৯৪৯), সাপ্তাহিক ইত্তেফাক (১৯৪৯) ও দৈনিক ইত্তেফাক (১৯৫৩)-এর প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য ছিলেন। তিনি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন।
এম. এ. ওয়াদুদ ১৯৫৩-৫৪ সালে প্রাদেশিক ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। দুবার নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ১ (এক) বার প্রাদেশিক ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদকের দায়িত্বও তিনি নিষ্ঠা ও সাফল্যের সাথে পালন করেন। তিনি আওয়ামী লীগের একজন সক্রিয় সদস্য ছিলেন। ভাষা আন্দোলনে নেতৃত¦ দেয়ার কারণে ১৯৪৮ সালে একবার এবং ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০ আগস্ট পর্যন্ত দ্বিতীয়বার কারাবরণ করেন। ১৯৫৪ সালে ৯২(ক) ধারা জারি করে যুক্তফ্রন্ট সরকারকে বরখাস্ত করার পর ছাত্র আন্দোলনকে স্তিমিত করার জন্যে পুনরায় এম. এ. ওয়াদুদকে কারারুদ্ধ করা হয়। ১৯৪৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয় চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার কারণে তৎকালীন শাসকদের রুদ্ররোষের শিকার হয়ে দীর্ঘদিন আত্মগোপন করতে তিনি বাধ্য হন। ১৯৪৯ সালে ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার কারণে বঙ্গবন্ধুসহ এম. এ. ওয়াদুদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত হন।
১৯৭৮ সালে সামরিক সরকারের সাথে হাত মিলিয়ে মন্ত্রীত্ব গ্রহণে অস্বীকৃতি জানানোর জন্যে তিনবার বিভিন্ন মেয়াদে এম. এ. ওয়াদুদ কারাবরণ করেন। সামরিক শাসনের সময়ে তাঁর বিরুদ্ধে বারবার মিথ্যা মামলা দায়ের করে হয়রানি করা হয়।
এম. এ. ওয়াদুদ ১৯৪৭-এর দেশবিভাগের পর থেকে ১৯৭১ পেরিয়ে ১৯৮৩-এর ২৮ আগস্টে মৃত্যুবরণের পূর্ব পর্যন্ত বাঙালির ভাষা, স্বাধিকার ও অর্থনৈতিক মুক্তির সকল আন্দোলনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষামন্ত্রী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, চাঁদপুর-৩ নির্বাচনী আসনের সংসদ সদস্য, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী (২০০৯-২০১৩), চিকিৎসক, আইনজীবী ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডাঃ দীপু মনি তাঁর একমাত্র কন্যা এবং চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি, ডায়াবেটিক ফুট সার্জারিতে দেশের একমাত্র বিশেষজ্ঞ শল্যচিকিৎসক ডাঃ জাওয়াদুর রহিম ওয়াদুদ (টিপু) তাঁর একমাত্র পুত্র।
এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো। বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।