চাঁদপুরে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। শুধু জুলাই মাসেই ৮১১ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। আর ১ থেকে ৩ আগস্ট পর্যন্ত ১৪০ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালসহ বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাসেবা নিচ্ছে।
চাঁদপুর ২৫০ শয্যার সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে ৫৮ জন। প্রতিদিন এখানে রেকর্ড সংখ্যক রোগী ভর্তি হচ্ছে। সংখ্যা বাড়ায় হাসপাতালের দুই ডেঙ্গু ওয়ার্ডের পাশাপাশি বিভিন্ন ওয়ার্ডের ফ্লোর ও বারান্দায় মশারি টানিয়ে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। এতে রোগীর চাপে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
চাঁদপুর সরকারি হাসপাতাল ছাড়াও বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছে। এর মধ্যে হাইমচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১০ জন, মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১০ জন, মতলব দক্ষিণ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২১ জন, হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ছয়জন, কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ২২ জন, শাহরাস্তি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৫ জন ও ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৪ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। এছাড়াও কিছু রোগী আছেন যারা বাড়িতেই চিকিৎসা নিচ্ছেন।
চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ডেঙ্গুতে চিকিৎসাধীন জমির হোসেন বলেন, ‘আমি ঢাকার উত্তরাতে চাকরি করি। সেখানে হঠাৎ জ্বর হয়। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে রক্ত পরীক্ষা করার পর ডেঙ্গু শনাক্ত হয়। এরপর বাড়ি চলে আসি। অবস্থার উন্নতি না হলে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়।’
চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. এ কে এম মাহাবুবুর রহমান বলেন, ‘প্রতিদিন ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এতে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। আমাদের শুধু সচেতন হতে হবে। চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে যেসব রোগী ভর্তি আছে, তার বেশির ভাগই ঢাকায় আক্রান্ত হয়েছে। হাসপাতালে আগত রোগীদের আমরা মাইকিংয়ের মাধ্যমে সচেতন করছি। হাসপাতালে দুটি ডেঙ্গু ওয়ার্ড রয়েছে, রোগীর চাপ এতোটাই বেড়েছে, যার কারণে আমাদের ফ্লোরে রেখেই চিকিৎসা সেবা দিয়ে যেতে হচ্ছে। ডেঙ্গু রোগীদের জন্য আলাদা চিকিৎসকরা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছেন।’
চাঁদপুর সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ‘জুলাইয়ের মাঝামাঝি থেকে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ক্রমশ বেড়েই চলছে। জেলা হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের জন্য ডেডিকেটেড বেডের ডেঙ্গু ইউনিট করার পাশাপাশি উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রেগুলোতে ডেঙ্গু কর্নার করা হয়েছে। ঢাকা থেকে লঞ্চযোগে ডেঙ্গু মশা চাঁদপুরে আসতে পারে, কিংবা লঞ্চে ডেঙ্গু মশা থাকায় অনেক যাত্রী আক্রান্ত হচ্ছেন। আমরা পৌরসভাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।’
চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল বলেন, ‘সরকারি নির্দেশনার বাইরেও নিয়মিত মশক নিধন কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। পৌরসভা থেকে অতিরিক্ত জনবল নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা লঞ্চগুলোতে আলাদাভাবে মশক নিধন কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।’ সূত্র : এনটিভি
এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো। বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।