সরকার দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে ইউনিয়ন পর্যায়ে স্বল্পমূল্যে টিসিবি পণ্য বিক্রির ব্যবস্থা করলেও চেয়ারম্যান ও সচিবের যোগসাজশে সাধারণ মানুষ এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সর্বশেষ ফরিদগঞ্জ উপজেলার ফরিদগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়নে ২০ নভেম্বর সোমবার চেয়ারম্যান ও সচিবের কারণে নয়-ছয়ের এ ঘটনা ঘটে। ফলে টিসিবির কার্ডধারীরা এসে পণ্য না পেয়ে ফেরত গেছেন। যদিও সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান আগামী মাসে পণ্য না পাওয়া টিসিবির কার্ডধারীদের পণ্য দেয়ার আশ^াস দিয়েছেন।
জানা গেছে, ফরিদগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়নের নভেম্বর মাসের টিসিবির পণ্য বিক্রির নির্ধারিত দিন ছিলো ২০ নভেম্বর সোমবার। সেমতে টিসিবির ডিলার জহিরুল ইসলাম ওই ইউনিয়নের ১০৯০টি কার্ডের বিপরীতে তেল, ডাল ও চাল নিয়ে সকাল থেকেই কার্ডধারীদের মাঝে পণ্য বিক্রি শুরু করে। কিন্তু সচিবের স্বাক্ষরিত কার্ড ও চেয়ারম্যানের নির্দেশে পণ্য বিতরণ শেষ করার আগেই ১০১টি কার্ডের পণ্য নিয়ে যায় লোকজন। ফলে পণ্য না থাকায় টিসিবির কার্ডধারী লোকজনকে এসে ফেরত যেতে হয়। এতে করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় ইউনিয়ন পরিষদের সামনে।
জানা গেছে, ৯৮৯টি কার্ডে পণ্য বিতরণের পর সচিবের ভিজিটিং কার্ডের বিপরীত পিঠে স্বাক্ষরকৃত তথ্য অনুযায়ী একজনই ১৭টি কার্ডের মালামাল নিয়ে যায়। একইভাবে বাকি সকল মালামাল চেয়ারম্যানের নামে নিয়ে যায় তার লোকজন।
টিসিবির কার্ডধারী আইউব আলী, নাছির উদ্দিন, ইউছুফ, ফারজানা, আবুল কালাম, বিউটি, শাহিনুরসহ অনেকে বলেন, প্রতি মাসে চেয়ারম্যান ও সচিব মিলে টিসিবির অনেক পণ্য নিয়ে যায়। অনেক কার্ডধারীকে এসে ফিরে যেতে হয়। আজও তার ব্যতিক্রম হয়নি। সচিব ও চেয়ারম্যান মিলে অনেক মালামাল নিয়ে গেছে। চেয়ারম্যান ও সচিব যদি পণ্য নিতে হয়, তা হলে আমাদের কার্ড দেয়ার প্রয়োজন ছিল কি?
টিসিবির ডিলার জহিরুল ইসলাম বলেন, আমি সকাল থেকে পণ্য বিক্রি করছি। সচিবের স্বাক্ষরিত একটি ভিজিটিং কার্ডে ১৭টি কার্ডের পণ্য দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। পরে আরো ক’জন চেয়ারম্যানের লোক পরিচয়ে দিয়ে বাকি পণ্য নিয়ে যায়। সচিবকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, এরা চেয়ারম্যানের লোক। চেয়ারম্যানের নির্দেশে নাকি তারা পণ্য নিয়ে যেতে এসেছে। আমরা কী করবো?
ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা স্থানীয় ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম জানান, টিসিবির পণ্যের কার্ডধারীরা পণ্য না পাওয়ার কথা শুনে এখানে এসেছি। ঘটনার সত্যতা পেয়ে ইউএনওকে মুঠোফোনে জানিয়েছি।
ইউপি সচিব আমির হোসেন মুঠোফোনে বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আমি চেয়ারম্যানের কথায় পণ্য দিতে বলেছি। আমি কী করবো?
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন রিপন বলেন, আমি বলেছি, বিতরণ শেষ হলে যদি কোনো কার্ডের পণ্য থাকে, সেটি রেখে দিতে, যাতে অন্য মানুষকে দেয়া যায়। এতো পণ্য সচিব কেন নিতে দিলো, আমি কথা বলে দেখবো। তবে আগামী মাসে পণ্য না পাওয়া কার্ডধারীদের টিসিবির পণ্য দেয়ার আশ^াস দেন তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌলি মন্ডল মুঠোফোনে জানান, তিনি টিসিবির পণ্য না পাওয়ার বিষয়টি মাত্র অবগত হয়েছেন। বিস্তারিত জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।
এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো। বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।